আসসালামু আলাইকুম।
ইতাল বাংলা সমিতি ১৯৯২ সালে রোমে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কমিউনিটির ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠন। সামাজিক মানবিক সহায়তা সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সহ ইতালিতে বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রয়োজনীয় সকল অঙ্গনে গত ৩০ বছর ধরে অত্যন্ত সফলতা বলিষ্ঠতা সততা নিয়ে কর্মকান্ড করে আসছে। ইতালির ইমিগ্রেশন আইনের বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত ইতাল বাংলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমানের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ইতাল বাংলার সমিতির কমিউনিটির বহুবিধ সেবা কার্জক্রমের অন্যতম বলিষ্ঠ উদ্যোগ ও অন্যতম অবদান ইতালির শ্রম বাজারে বাংলাদেশী নাগরিকের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত করা। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করার নিরলশ কার্যক্রম চালায়।
২০০৩ সাল বাংলাদেশ থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইতালিতে ও ইতালির সাথে দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ক চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করলে ইতালিয়ান সরকার বাংলাদেশী নাগরিকদের তথাকথিত Decreto Flussi ( বিভিন্ন দেশের শ্রমিকের কাজের অনুমতি সংক্রান্ত ইমিগ্রেশন অর্ডার ডিক্রি ) আওতাভুক্ত করে যার ফলশ্রুতিতে ২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক বাংলাদেশী নাগরিক ইতালির শ্রম বাজারে কর্ম অনুমতি নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে সরকার পরিবর্তন এবং ইতালি সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা মূলক সম্পর্ক ধারার পরিবর্তন হওয়ার ফলে ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশী নাগরিকদের তথাকথিত Decreto Flussi হতে বাংলাদেশর নাগরিকদের স্থগিত করা হয়। ফলে দীর্ঘ ৮ বছর বাংলাদেশি নাগরিকদের ইতালিতে কর্মের অনুমতি নিয়ে ইতালীতে আসার প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল।
আবারো ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইতাল বাংলা সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায় কাছে নিয়মিত লেখালেখি ও তদবিরের মাধ্যমে পুনরায় ২০২০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন করেন। ফলে ২০০০ সাল থেকে ইতালিতে আবারো বাংলাদেশি নাগরিক কর্মের বাজারে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে সক্ষম হচ্ছে। উল্লেখ্য যে ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশী নাগরিকদের কে ইতালিতে কর্মের বাজারে প্রবেশ অধিকার থেকে স্থগিত রাখার কারণ গুলি আমাদের জানা প্রয়োজন। অন্যথায় আমরা আবারও ইতালি সরকারের এক মুখী সিদ্ধান্তের এই কর্মের বাজারটি হারাতে পারি।
প্রথমতঃ বাংলাদেশ থেকে যারা ইতালিতে কাজের অনুমতি নিয়ে আসছেন তারা ইতালির কর্ম বাজারে প্রয়োজনের সাথে নিজেদেরকে প্রস্তুত করেন না। ইতালী সরকারে বিভিন্ন দেশের সাথে ইমিগ্রেশন সহযোগীতা চুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে সেই দেশের নাগরিকেদের অবৈধ ইমিগ্রেশনের প্রবনতা রোধে সরকারের সহযোগীতা। ২০০৩ সাল হতে ২০১১ সাল পর্জন্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের বৈধ ভাবে ইতালীতে কাজের ভিসা নিয়ে আসার পরে কাজের দক্ষতা ও ষাগত দক্ষতা না থাকায় কাজের মালিকের সাথে কাজের সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যার্থ হয়ে পরবর্তিতে রেসিডেন্স পারমিট
নবায়নে করতে ব্যার্থ হয়ে অবৈধ হয়ে যাওয়া এবং সবচাইতে মারাত্বক প্রবনতা হচ্ছে পরিচয় গোপন বা পরিবর্তন করে ইতালিতে অবৈধ ভাবে বসবাস করা। বাংলাদেশ সরকার তাদের অবৈধ ভাবে ইতালীতে অবস্থানরত নাগরিকদের দেশে ফেরত নিতে সহযোগীতা না করার কারনে ২০১২ সাল হতে বাংলাদেশের করর্মিদের ইতালতে প্রবেশের অধিকার স্থগিত করা হয়।
আমরা আবার দেখতে পাচ্ছি ২০২০ / ২০২১ সালে বৈধ অনুমতি প্রাপ্ত বাংলাদেশী শ্রমিকেরা আবারো ২০০৩ -২০১১ সালের একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি করতে চলেছে।
এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ইতাল বাংলা সমিতির পক্ষ হতে PROGETTO LAVORO ITALBANGLA ( ইতালবাংলা কর্মসংস্থান প্রকল্প ) নামে একটি বিশেষ কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশীদের মধ্যে সচেতনা সুষ্টি করা এবং ইতালীতে তাদের আগমন কর্সসংস্থান অবস্থানের গুনগত মানের উন্নয়ন ঘটানো।
আমরা সবাই জানি ইতালিয়ান ভাষা ছাড়া এখানে অন্য কোন ভাষার ব্যবহার হয় না। বাংলাদেশ থেকে আগত সকল বাংলাদেশের 100% নাগরিক ইতালিয়ান ভাষা শিখতে চায় না বা শিখে না । ইতালীয়ান জানা থাকে না ফলে ইতালিয়ান মালিক তাকে কর্মের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে পারেনা। যার ফলশ্রুতিতে একজন বাংলাদশী নাগরিক ইতালীতে আসার পরে কাজের কন্ট্রাকট নিয়ে নিজেদের পেপার পাবার কার্জক্রম সম্পাদন করে যা তার জন্য হয়ে উঠে ব্যায় বহুল। আমরা যদি শুধুমাত্র এই প্রতিকূলতা দূর করতে পারি প্রতিটি বাংলাদেশী নাগরিক ইতালির কর্মের বাজারে অত্যন্ত সুপ্রতিষ্ঠিত হতে সক্ষম হবে।
দ্বিতীয়তঃ ইতালি উন্নত বিশ্বের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ। এই দেশে দক্ষ শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা অথচ বাংলাদেশ থেকে যে সকল শ্রমিক ইতালিতে আসছে তারা কোন কাজের প্রশিক্ষণ ছাড়াই আসছে। এ প্রসঙ্গে বলা যায় যে একটি ওয়ার্ক পারমিটের প্রসেসিং করতে সাধারণত চার ছয় মাস সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। এই অপেক্ষামান সময়ের মধ্যে যেকোনো অভিবাসী প্রত্যাশী ইতালিয়ান ভাষা শিক্ষা এবং একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য যথেষ্ট। অথচ নুন্যতম সচেতনাতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউই এই কাজটা করে না বা করতে চায় না। এমনকি বলতে শোনা যায় ইতালীতে গিয়ে শিখব। অথচ ইতালীতে আসার পরে তার আর ভাষা শিখা হয় না।
ইতাল বাংলা সমিতির – প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি ও ইতালবাংলা কর্মসংস্থান প্রকল্প কার্জক্রম :
১) PROGETTO LAVORO ITALBANGLA ( ইতালবাংলা কর্মসংস্থান প্রকল্প কর্মসূচী) : মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রশিক্ষনে অংশগ্রহনকারীদের ইতালীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের সংযুক্ত করা ।
২) বাংলাদেশে কারিগরি প্রশিক্ষন ও ইতালীয়ান ভাষা কর্মসূচী : বাংলাদেশে ঢাকায় ৫টি প্রশিক্ষন কেন্দের সাথে সহযোগীতা চুক্তির মাধ্যমে ইতালীতে আগমনে আগ্রহীদের প্রয়োজনী কারিগরি প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করা ।
৩) বাংলাদেশে ইতালীয়ান ভাষা প্রশিক্ষন কর্মসূচী : ইতালী হতে সরা সরি অনলাইনে জুমের মাধ্যমে গত মার্চ মাস হতে সফলতার সাথে ইতালীয়ান ভাষা শিক্ষা কার্জ্যক্রম পরিচালনা করে আসেছ।
বাংলাদেশে ইতালীয়ান ভাষা প্রশিক্ষন কর্মসূচী
আমাদের মাধ্যমে ইতালীতে কর্মসংস্থান সেবা পাবার প্রক্রিয়া :
১) ইতালীয়ান ভাষা প্রশিক্ষন কোর্সে ভর্তি হওয়া।
২) একটি কারিগরি প্রশিক্ষন কোর্সে ভর্তি হওয়া।
৩) একটি ইউরোপীয়ান স্টাইলে CV (কারিকুলাম ভিটায়ে) জীবন বৃত্তান্ত তৈরী করে ইমেইলে আমাদের কাছে পাঠাতে হবে : EDSB@ITALBANGLA.NET
জীবন বৃত্তান্ত এর সাথে সকল ডকুমেন্ট কালার অরিজিনাল কপি হতে স্কেন করে দিতে হবে :
01. PASSPORT
02. SSC / HSC EDUCATION CERTIFICATE WITH MARK SHEET (ITALIAN TRANSLATED AND LEGALIZED FROM EMBASSY)
03. PROFESSIONAL TRAINNING CERTIFICATE (ITALIAN TRANSLATED AND LEGALIZED FROM EMBASSY)
⇒ শিক্ষিত প্রার্থীর জন্য অনেক পদ্ধতিতে ভিসা হতে পারে যেমন কাজের স্পনসর, কারিগরি প্রশিক্ষন, উচ্চ শিক্ষা এবং দক্ষতা HIGH SKILLED SPONSOR
⇒ যাদের কোন লেখাপড়া নেই ও কারিগরী দক্ষতা তাদের অবশ্যই ইতালীয়ান ভাষা ও কারিগরি প্রশিক্ষন নিতে হবে। তাদের জন্য শুধু মাত্র বছরে একবার কাজের স্পনসর পদ্ধতিতে আবেদন হবে। এক বছরে আবেদন গ্রহন না হলে আবার পরের বছরে চেষ্টা করা যাবে।
যোগাযোগ :
ইতালী ( হোয়াটসআপ) : +39 3272264994
বাংলাদেশ ( হোয়াটসআপ) : +88 0175 615 950 / 0190 678 907